আন্তর্জাতিক চাঁদ দেখা কমিটি
আন্তর্জাতিক চাঁদ দেখা কমিটি চাঁদের সঠিক হিসাব
চাঁদের সঠিক হিসাব প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন
হযরত জানশরীফ শাহ সুরেশ্বরী রাঃ ব্যক্তিগত জীবনে চাঁদ দেখে হিজরী মাসের তারিখ গণনার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কেননা, আল্লাহর নির্ধারিত রহমত সমূহ নির্দিষ্ট দিবসে নির্দিষ্ট সময়ে অবতীর্ণ হয়। অনেকে অজ্ঞতা ও গাফিলতির কারণে আল্লাহ প্রদত্ত সেই সকল রহমত হতে বঞ্চিত হচ্ছে; অন্যদিকে আল্লাহপাকের নির্দেশ অমান্য করে গুনাহগার রূপে পরিগণিত হচ্ছে। কেননা বাংলাদেশে সঠিক সময়ে চাঁদ উদিত হলেও ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার জন্য যথাসময়ে চাঁদ দেখা যায় না। এই দেশে চান্দ্র মাসের হিসাব গণনা সৌদি আরব বা অন্যান্য মুসলিম দেশ হতে এক বা দুই দিন দেরিতে শুরু হওয়ায় এই দেশের মানুষ যথা সময়ে ইবাদত-বন্দেগী করতে না পারার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের বর্ণিত রহমত ফজিলত হতে বঞ্চিত হয় ; অন্যদিকে দেখা যায়, এই দেশে দেরিতে চাঁদ দেখার কারণে ঈদের দিনেও এখানে মানুষ রোজা রাখে। ফলে একটি হারাম রোজা রাখার কারণে পাপের ভাগী হয়।
এ মহতী উদ্যোগের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে খাজা আহমদীনূরী সর্ব প্রথম প্রচার করতে মাসিক সুরেশ্বর পত্রিকায় তাঁর নিজের ও অন্যান্য লেখকদের এ বিষয়ক লেখা প্রকাশ করেন। বিশেষতঃ সুরেশ্বর পত্রিকায় ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বর সংখ্যায় বরেণ্য ব্যক্তিদের সাক্ষাতকারটি সুধী মহলে বেশ সাড়া জাগায়। যারা সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, তাঁদের উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন মরহুম রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাই, প্রফেসর আনম আবদুল মান্নান খান, জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক কবি আসাদ চৌধুরী, খ্যাতিমান কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, গণমানুষের কবি আবদুল হাই শিকদার, আবহাওয়া বিজ্ঞানী মুহাম্মদ এনায়েতুর রহমান মিয়া, খ্যাতিমান শিশু সাহিত্যিক খালেক বিন জয়েন উদ্দিন, ঊর্ধ্বতন সহকারী সচিব মনজুরুর রহমান, মুস্তফা মাসুদ-সম্পাদক মাসিক অগ্রপথিক, বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক মসউদ উশ শহীদ প্রমুখ। এভাবে সুরেশ্বর পত্রিকায় তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন লেখা প্রকাশিত হতে থাকে।
এভাবে তিনি জনমত গড়ে তুলে ১লা এপ্রিল ২০০০ সালে আল আরাফাহ ব্যাংক লাইব্রেরিতে প্রথম সেমিনারের আয়োজন করেন। সেমিনারে আলোচনা করেন হযরত কমরুদ্দীন পীর সাহেব- মদিনার জামাত, প্রফেসর আ. ন. ম. আবদুল মান্নান খান, প্রফেসর মুহাম্মদ ইব্রাহিম, প্রফেসর আবদুর রহমান, ড. কাওসার মুস্তফা, এ. জেড. এম. শামসুল আলম, অধ্যাপক মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন খান, মাওলানা এ. কে. এম. মাহবুবুর রহমান, কাজী আজিজুল হক, জ্যোতিষী প্রফেসর হাওলাদার প্রমুখ। তাদের সবাই একই দিনে সারা বিশ্বে চাঁদ কেন্দ্রিক ইসলামী পর্বসমূহ উদযাপনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
তারপর তাঁরই সভাপতিত্বে গত ২৪ নভেম্বর, ২০০০ খৃষ্টাব্দে জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকায় এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে দেশ-বিদেশের অসংখ্য আলিম-উলামা, জ্ঞানী-গুণী, বুদ্ধিজীবী সমবেত ছিলেন এবং কুরআন, হাদিস ও ফেকাহের মতাদর্শে একাত্ম হয়ে তাঁরা বিশ্বব্যাপী একই দিনে ঈদ, রোযা ও অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগী পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
খাজা আহমদীনূরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক চাঁদ দেখা কমিটির ব্যানারে ১৯ জানুয়ারি ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক মতবিনিময় সভা ও সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বিষয় ছিল : ‘সমগ্র বিশ্বে একই দিনে রোজা, ঈদ ও ইসলামী পর্বসমূহ উদযাপন।’